পৌরনীতি ও নাগরিকতা

জেলা পরিষদ

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - পৌরনীতি ও নাগরিকতা - বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা | NCTB BOOK

জেলা পরিষদ:
বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন আমল থেকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘জেলা পরিষদ থাকলেও ১৯৯১ সালে জেলা পরিষদ আইন বিলুপ্ত করে দেয়ার পর প্রায় এক দশক জেলা পরিষদের অস্তিত্ব ছিল না। পুনরায় ২০০০ সালে জেলা পরিষদ আইন পাস করে দেশের সকল জেলায় জেলা পরিষদ গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। পরিষদের মেয়াদ ৫ বছর।

গঠন:
একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য এবং সংরক্ষিত আসনে ৫ জন মহিলা সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত হয়। কোনো জেলার সংসদ-সদস্যগণ আইন অনুযায়ী উক্ত জেলার পরিষদের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। আইন অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্য বা অন্য কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বা সদস্যদের স্বীয় পদে থেকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই ।


আইন অনুযায়ী জেলার অন্তর্ভূক্ত সিটি কর্পোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র ও কমিশনারবৃন্দ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও কমিশনার এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সকল সদস্যদের ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন। অর্থাৎ পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে জেলা পরিষদের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। প্রথম বারের মতো ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের মাধ্যমে জেলা পরিষদ গঠন করা হয়।

কার্যাবলি:
২০০০ সালের আইনের অধীনে জেলা পরিষদকে ১২টি বাধ্যতামূলক এবং ৬৮টি ঐচ্ছিক কার্যাবলির দায়িত্ব দেওয়া হয়। জেলা পরিষদের উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন, শিল্প এবং বাণিজ্যের উন্নয়ন, সরকারি হাসপাতাল তত্ত্বাবধান, পারিবারিক ক্লিনিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন । সেই সাথে আন্তঃজেলা সড়ক প্রকল্প প্রস্তুতকরণ এবং চলমান পুলিশি কর্মকাণ্ডের তত্ত্বাবধান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সহায়তা, সন্ত্রাস দমনে সুপারিশ এবং উপজেলা কর্মকাণ্ডের তদারক । জেলা পরিষদ ৫ বছর মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করে এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের জন্য পাঠায় ।


আয়ের উৎস:
জেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ অনুযায়ী কর, টোল, ফিস, সম্পত্তি হতে প্রাপ্ত আয়/ মুনাফা, ব্যক্তি, সরকার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান, বিনিয়োগ হতে প্রাপ্ত আয় এবং অন্যান্য উৎস হতে প্রাপ্ত অর্থ নিয়ে জেলা পরিষদের তহবিল গঠিত হয়। জেলা পরিষদের জন্য জমি হস্তান্তর করের ১ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ ভূমি কর রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে । এছাড়া হাট-বাজার, ফেরিঘাট এবং জলমহাল থেকে বর্ধিত পরিমাণ লিজের অর্থ জেলা পরিষদ পাবে । 

আরও দেখুন...

Promotion